ডুমুরিয়ায় ঘের তলিয়ে গলদার ঘেরে ঢুকে পড়েছে আফ্রিকান রাক্ষুসে মাগুর !
ডুমুরিয়া প্রতিনিধি
খুলনার ডুমুরিয়ায় গলদা-বাগদার ঘেরে আফ্রিকান রাক্ষুসে মাগুর ঢুকে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখে পড়েছেন হুমায়ুন কবির মোল্যা নামে এক মৎস্য চাষী। তার ঘেরের পাশে অবৈধপন্থায় চাষ করা হয়েছে রাক্ষুসে এমাগুর। খুলনার এক প্রভাবশালী ব্যাক্তি পোল্ট্রী খামারের আড়ালে একটি হাউজে চাষ করেছেন আফ্রিকান মাগুর। টানাবৃষ্টিতে বিলের সমস্ত ঘের যখন ডুবুডুবু ঠিক সেই মুহুর্তে নিষিদ্ধ ওই মাগুর আতংকে পড়েছে পাশর্^বর্তী ঘের ব্যবসায়ীরা। উপজেলার গুটুদিয়া ইউনিয়নে পূর্ব জিলেরডাঙ্গা এলাকাস্থ টিয়াবুনিয়া বিলে এঘটনা ঘটে।
জানা যায়, টিয়াবুনিয়া বিলে খুলনার ডাঃ গাজী মিজানুর রহমানের মালিকানাধীন বিসমিল্লাহ পোল্ট্রী ফার্মের আড়ালে একটি হাউজে বিদেশী জাতের আফ্রিকান রাক্ষুসে মাগুর চাষ করা হয়েছে। তাদের খাদ্য হিসেবে দেয়া হয় বিষ্টা ও মৃত মুরগী। টিয়াবুনিয়া মৌজায় কয়েক হাজার মৎস্য ঘের রয়েছে। যার অধিকাংশ ঘেরে গলদা ও বাগদা চিংড়ি চাষাবাদ হয়। রাক্ষুসে মাগুরের হাউজের পাশে কৈয়া বাজার এলাকার মোল্যা হুমায়ুন কবির ওরফে খোকার রয়েছে ১২ বিঘা জমির একটি গলদা-বাগদার ঘের। কয়েকদিনের ভারি ভর্ষনে সেই ঘেরের বাঁধ তলিয়ে রাক্ষুসে মাগুর ঢুকে পড়েছে তার গলদার ঘেরে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী মৎস্য চাষী হুমায়ুন কবির খোকা বলেন, টানা বৃষ্টিতে আমার মাছের ঘের তলিয়ে পাশে ডাঃ গাজী মিজানুর রহমানের বিসমিল্লাহ পোল্ট্রী ফার্মের একটি হাউজে চাষকরা বিদেশী ওই মাগুর ঢুকে পড়ে। ওই হাউজে ব্যাপক পরিমাণে রাক্ষুসে মাগুর চাষ করেছে। এবছর ৩লাখ টাকা খরচ করে ঘের প্রস্তুত করি। এরপর ৫০ হাজার পিচ গলদার রেনু, ৪০ হাজার পিচ বাগদার রেনুসহ ১৪’শ পুরাতন গলদার পিচ এবং ৫০ মণের বেশি সাদা মাছ ছাড়া হয়েছে ঘেরে। ঘেরে রাক্ষুসে মাগুর ঢুকে পড়ায় তিনি ১৫ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতির হুমকীতে পড়েছেন। তিনি বলেন, সকাল থেকে স্থানীয় লোকজন দিয়ে মাগুর ধরার চেষ্টা করেছি। ৪০/৫০টি ধরতে পেরেছি। ঘেরভরা পানি, অসংখ্য মাগুর ঢুকে পড়েছে তার ঘেরে এমনটাই আশংকা করছেন তিনি।
পাশের ঘের ব্যবসায়ী সঞ্জয় মন্ডল জানান, গলদা-বাগদার ঘেরে রাক্ষুসে মাগুর ঢুকলে আর কিছুই থাকবে না। টানাবৃষ্টিতে সমস্ত ঘেরগুলো তলিয়ে পড়েছে। এখন আমরা চরম আতংকে রয়েছি রাক্ষুসে মাগুর নিয়ে।
এ বিষয়ে বিসমিল্লাহ পোল্ট্রী খামারের ম্যানেজার এসকে হাবিবুর রহমান জানান, আফ্রিকান মাগুর চাষ সরকারিভাবে নিষিদ্ধ তা তিনি জানেননা। যেহেতু বাজারঘাটে বিক্রি হয়, তাই চাষ করা হয়েছে। এ মাছ চাষ অবৈধ থাকলে অবশ্যই বন্ধ করা হবে। আর গলদার ঘেরে মাগুর ঢুকে ক্ষতির বিষয়ে তিনি মালিক পক্ষকে অবহিতপূর্বক পরবর্তি পদক্ষেপ নিবেন বলে এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আবু বককর সিদ্দিক জানান, আফ্রিকান মাগুর মাছ চাষ বাংলাদেশে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষিত। ২০১৪ সালের জুন থেকে আফ্রিকান মাগুরের আমদানি, উৎপাদন, বিপণনের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। এই আইন অমান্য করলে দুই বছরের জেল ও ৫ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দÐের বিধান রাখা হয়েছে আইনে। তিনি বলেন, জানতে পেরেছি জিলেরডাঙ্গা এলাকায় একটি পোল্ট্রী খামারের আড়ালে হাউজে আফ্রিকান রাক্ষুসে মাগুর চাষ করেছে। সকালে ইউএনও স্যারের সাথে এনিয়ে কথা হয়েছে। দ্রæত আমরা ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ব্যবস্থা নিব।
তুষার কবিরাজ,,,,, ডুমুরিয়া
ফোন নম্বর -০১৯০৬৩৭৭১৮১