নড়াইলে মহান বিজয় দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি ও পুলিশ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননাঃ
উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি:
নড়াইলে মহান বিজয় দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি ও পুলিশ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা যোগ্যতা ভিত্তিতে পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগ।
উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি জানান, সোমবার (১৬ই ডিসেম্বর) মহান বিজয় দিবস। বিজয় দিবস বাঙালি জাতির আত্মগৌরবের একটি দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের মধ্যখ দিয়ে বিশ্ব মানচিত্রে স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে। গৌরবময় বিজয়ের এই দিনে জাতির সূর্যসন্তান মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী সকল শহীদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে নড়াইল জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে মুক্তিযুদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভ জেলা শিল্পকলা একাডেমী, পুস্পস্তবক অর্পণ করেন এবং দোয়া অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন নড়াইল জেলা পুলিশ সুপার। পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। জাতীয় পতাকা উত্তোলন শেষে বিজয় দিবস মেলার উদ্বোধন ও বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন কাজী এহসানুল কবীর, পুলিশ সুপার, নড়াইল ।
অতঃপর পুলিশ সুপার জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা ও আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকেন। এ সময় কিশোর রায়, সহকারি পুলিশ সুপার (কালিয়া সার্কেল); নড়াইলসহ জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ ও অন্যান্য পুলিশ সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অপরদিকে
পুলিশ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা প্রদান
------------------------------------
সোমবার (১৬ই ডিসেম্বর) পুলিশ লাইনস্ ড্রিল শেডে মহান বিজয় দিবস ২০২৪ উপলক্ষ্যে পুলিশ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা প্রদান ও প্রীতিভোজ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন নড়াইল জেলা পুলিশ সুপার কাজী এহসানুল কবীর। অনুষ্ঠানের শুরুতেই পুলিশ সুপার মহোদয় পুলিশ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। নড়াইল সদর থানাধীন ৭ জন, লোহাগড়া থানাধীন ১৭ জন, কালিয়া থানাধীন ০৮ জন এবং নড়াগাতী থানাধীন ১৯ জনসহ মোট ৫১ জন পুলিশ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মৃত পুলিশ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে পরিবারের সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন। এরপর পুলিশ বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে তাদের বীরত্বগাঁথা অনেক স্মৃতি তুলে ধরেন। মুক্তিযুদ্ধে তাদের ত্যাগ তিতিক্ষা, কারো সন্তান হারানোর বেদনা, কারো সহকর্মী শহীদ হওয়ার ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। পরিশেষে পুলিশ সুপার বীর পুলিশ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে বক্তব্যে বলেন, নড়াইল জেলা পুলিশ ভবিষ্যৎ প্রজন্মদের কাছে পুলিশ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যুদ্ধকালীন ইতিহাস স্মরণীয় করে রাখতে একটি স্মরণিকা প্রকাশ করবে। এ বিষয়ে তিনি পুলিশ বীর মুক্তিযোদ্ধাগণের সহযোগিতা কামনা করেন। পুলিশ সুপার"র এমন সুন্দর সিদ্ধান্তে পুলিশ বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ সাধুবাদ জ্ঞাপন করেন। পরিশেষে পুলিশ সুপার সবার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন এবং জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে উপহার সামগ্রী তুলে দেন। এ সময় কিশোর রায়, সহকারি পুলিশ সুপার (কালিয়া সার্কেল); নড়াইলসহ জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ ও অন্যান্য পুলিশ সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এদিকে
নড়াইলে সম্পূর্ণ যোগ্যতা এবং মেধার ভিত্তিতে পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগ পেল ২১ জন। সোমবার (১৬ই ডিসেম্বর) দুপুর জেলা পুলিশ নড়াইল এর আয়োজনে পুলিশ লাইনস্ ড্রিল শেডে বাংলাদেশ পুলিশ ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে প্রাথমিকভাবে মনোনীত প্রার্থীদের উদ্দেশ্যে ব্রিফিং এর আয়োজন করা হয়। ব্রিফিং অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নড়াইল জেলা পুলিশ সুপার কাজী এহসানুল কবীর মহোদয়। নড়াইল জেলায় সেপ্টেম্বর-২০২৪ এ ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদের জন্য প্রাথমিকভাবে মোট ১৭৫৮ জন প্রার্থী আবেদন করেন। প্রাথমিক কাগজপত্র যাচাই এবং মাঠ পরীক্ষা সম্পন্ন করে ২৫৮ জন প্রার্থী উত্তীর্ণ হয়ে লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। লিখিত পরীক্ষায় ৬৯ জন প্রার্থী কৃতকার্য হয়ে মৌখিক ও মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। গত ১৯ নভেম্বর (মঙ্গলবার) নড়াইল জেলা পুলিশ লাইনস্ মাঠের ড্রিল শেডে পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষা শেষে ১৯ জন পুরুষ ও ২ জন নারী মোট ২১ জন উত্তীর্ণ হয়। এর মধ্যে মেধা কোটা (পুরুষ)-১৮ জন;
মেধা কোটা (নারী)-২ জন;
মুক্তিযোদ্ধা কোটা (পুরুষ)-১ জন। ২৬ নভেম্বর (মঙ্গলবার) উত্তীর্ণদের প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার মধ্য দিয়ে ১৯ জন পুরুষ ও ০২ জন নারীসহ মোট ২১ জনকে প্রাথমিকভাবে মনোনয়ন করা হয় । এছাড়া সাধারণ ও বিভিন্ন কোটায় দুইজনকে অপেক্ষমান তালিকায় রাখা হয়। প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত প্রার্থীদের কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল, রাজারবাগ, ঢাকায় স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। স্বাস্থ্য পরীক্ষায় যোগ্য প্রার্থীর পুলিশ ভেরিফিকেশন সন্তোষজনক হলে মৌলিক প্রশিক্ষণের জন্য প্রাথমিকভাবে মনোনীত করা হবে। মৌলিক প্রশিক্ষণ যথাযথভাবে সমাপ্ত করলে চূড়ান্তভাবে নিয়োগ প্রদান করা হবে। নড়াইল জেলা পুলিশ সুপার ও নিয়োগ বোর্ডের চেয়ারম্যান জনাব কাজী এহসানুল কবীর মহোদয় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের ফুল দিয়ে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানান। তিনি উত্তীর্ণদের উদ্দেশ্যে বলেন "সম্পূর্ণ যোগ্যতা এবং মেধার ভিত্তিতে তোমরা উত্তীর্ণ হয়েছো"। নির্বাচিত প্রার্থীগণ তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে আনন্দে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ে। এ সময় অভিভাবকগণ সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা, যোগ্যতা এবং মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে তাদের সন্তানরা নির্বাচিত হওয়ায় পুলিশ সুপারকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। এ সময় কিশোর রায়, সহকারি পুলিশ সুপার (কালিয়া সার্কেল); নড়াইলসহ জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ ও অন্যান্য পুলিশ সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।