খুলনা নগরীর দৌলতপুরে অসহায় এক বাবা-মায়ের আত্মনাদ।
কাজী রায়হান তানভীর সৌরভ।
খালিশপুর থানা প্রতিনিধি।
খালেক গাজী পেশায় তিনি একজন রিক্সা চালক বয়স ৭০ ছাড়িছে তিনজন সুস্থ কর্ম সক্ষম ছেলে সন্তানের বাবা তিনি, কিন্তু নিয়তির কি নির্মম পরিহাস তিনজন কর্ম সক্ষম পুত্র সন্তানের একজনের বাসায়ও জায়গা হয়নি তার, যৌবন বয়সে দৌলতপুরের একটি পাটের মিলে কাজ করতেন তিনি নিজের রক্ত মাংস পানি করে উপার্জিত টাকা সম্পূর্ণটাই বিলিয়েছেন নিজের সংসার ও সন্তানদের পিছনে, কিন্তু হঠাৎ এক দুর্ঘটনায় তার মাথায় গুরুতর আঘাত লাগার কারণে কিছুটা দৃষ্টিহীন ও মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন তিনি, এরপর থেকেই পরিবারের চেনা মানুষ গুলো অপরিচিত হতে থাকে নিজের সন্তানেরাও নিতে চান না নিজের কর্ম অক্ষম বাবা ও মায়ের দায়িত্ব, এরপর থেকেই তিনি ও তার সহধর্মিনী একটি কুঁড়েঘর এর উঠানে কোনরকম আসবাবপত্র ছাড়া মাটিতে মাদুর পেতে দুর্বিষহ জীবন পার করতে থাকেন, নিজের ও স্ত্রীর মুখে দুবেলা দুমুঠো অন্য যোগানোর তাগিদে এই অন্ধ প্রায় বয়স্ক মানুষটি ভাড়া কৃত একটি রিক্সা নিয়ে নেমে পড়েন অর্থ উপার্জনের তাগিদে কিন্তু সেখানেও বাধে বিপত্তি অতিরিক্ত বয়স ও দৃষ্টি শক্তি কম থাকায় খালেক গাজীর রিক্সায় কোন প্যাসেঞ্জার উঠতে চায় না ভাড়া কৃত রিক্সার ভাড়া পর্যন্ত মালিক কে পরিশোধ করতে পারেন না খালেক গাজী এজন্য কোন রিক্সা মালীক এখন তাকে
রিকশা ভাড়া দিতেও চায়না,
তবুও জীবনের কাছে হার না মানা এই সাহসী যোদ্ধা প্রতিদিনই কোন না কোন উপায় রিক্সা ভাড়া নিয়ে পেরিয়ে পড়েন অর্থ উপার্জনের তাগিদে কারণ তিনি জানেন তিনি ঘরে বসে থাকলে তাদের মুখে অন্য যোগান দেওয়ার মানুষ নেই,
খালেক গাজীর বাসায় গেলে দেখা যায় একটি কুঁড়েঘর এর যে বারান্দাটিতে তারা থাকেন বৃষ্টির কারণে টিনের চাল ফুটো হয়ে পানি পড়ে ভিজে গেছে সেই বারান্দাটি মাটি ভিজে কাদায় পরিণত হয়েছে তাদের এমন অবস্থা দেখে কুঁড়েঘরের মালিক তাদেরকে কিছুদিনের জন্য তাদের ঘরের মধ্যে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন,
খালেক গাজীর স্ত্রীর সাথে কথা বলতে গেলে তিনি তাদের জীবনের এসব দুর্বিষহ ঘটনা তুলে ধরেন এবং পাশাপাশি সমাজের অর্থ বিত্তশালী মানুষদের কাছে আহ্বান জানান যেন সকলে তাদের এই অবস্থা দেখে তাদের পাশে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়,
অতিরিক্ত বয়স, কিছুটা দৃষ্টিশক্তিহীন ও কানে শুনতে না পারার কারণে কোন রিক্সা মালিক এখন খালেক গাজীকে রিক্সা ভাড়া দিতে চায় না বরং রিকশা ভাড়া চেতে গেলে শুনতে হয় কটুকথা,
এমতাবস্থায় একটি ইঞ্জিন চলিত অটোরিকশার ব্যবস্থা হলে খালেক গাজী ও তার স্ত্রী এমন দুর্বিষহ জীবন থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি পাবেন বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।