চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়ক ও টেকনাফ সড়ক সহ লবণ-পানিতে বিপদজনকঃ
জামাল উদ্দীন -কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি
লবণ-পানিতে নষ্ট হচ্ছে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কের অন্তত ২৭০ কিলোমিটার অংশ। কার্পেটিং উঠে গিয়ে সড়কে সৃষ্টি হচ্ছে ছোট-বড় গর্ত। এ ছাড়া লবণ পরিবহনের সময় পানি পড়ে সড়ক পিচ্ছিল হয়ে বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি। অথচ এ নিয়ে প্রশাসনের কোনো নজরদারি নেই, লবণচাষিদের সঙ্গে আলাপে জানা গেছে, টেকনাফ-কক্সবাজার সড়কের জাদিমুরা, দমদমিয়া, লেদা, হ্নীলা, রঙ্গিখালী, হোয়াইক্যং, সাবরাং, নয়াপাড়া, কক্সবাজার সদরের ভারুয়াখালী, খুরুশকুল, ইসলামপুর ও চকরিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন অন্তত দুই শতাধিক ট্রাক বোঝাই করে শত শত মেট্রিক টন লবণ চট্টগ্রাম ও ঢাকায় সরবরাহ করা হচ্ছে।
গত ১৪ই এপ্রিল দুপুরে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের নীলা, খারাং খালী মিনাবাজার সহ বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, সড়কের ওপর ট্রাক দাঁড় করে, মাঠে উৎপাদিত ভেজা লবণ বোঝাই করা হচ্ছে। এসব লবণ পরিবহনের সময় পলিথিন মোড়ানোর নির্দেশনা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। হোয়াইক্যং ও মরিচ্যা সড়কেও একই চিত্র নজরে পড়ে।
সড়কের ওপর ট্রাক দাঁড় করিয়ে লবণ বোঝাইয়ের কারণ জানতে চাইলে হোয়াইক্যং এলাকার চাষি তাহের ও শাহ আলম বলেন, এখানে লবণ মজুদ করার কোনো গুদাম নেই। ফলে রাস্তায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে মাঠ থেকে লবণ বোঝাই করা হয়।
নাম, নাবলার শর্তে এক নেতা বলেন, লবণ-বোঝাই কৃত ট্রাক ও কার্গু ট্রাক, হতে পানি পড়ে সড়ক পিচ্ছিল হওয়ায় প্রায় প্রতিদিন ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। বিগত বছর গুলোতে অহরহ দুর্ঘটনা হয়েছে।
সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, লবণ-পানির কারণে কক্সবাজার-টেকনাফ ও চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের প্রায় ২৭০ কিলোমিটারে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। সম্প্রতি কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের উনচি প্রাং পর্যন্ত কার্পেটিং কাজ প্রায় শেষ হয়েছে , উনচি প্রাং থেকে টেকনাফ পর্যন্ত, অংশে কোটি কোটি টাকার সংস্কারকাজ চলছে। কিন্তু লবণ-পানিতে ভিজে নতুন ডোনার কার্পেটিং, উঠে যাচ্ছে। তৈরি হচ্ছে খন্ড খন্ড গর্ত,এ বিষয়ে প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো দরকার। ‘টেকনাফ থেকে ককস বাজার ও ককস বাজার থেকে পটিয়া পর্যন্ত ট্রাকে পলিথিন বিছিয়ে লবণ বোঝাই করে পরিবহনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে আসছি অনেক দিন ধরে। কিন্তু প্রশাসন তা বাস্তবায়নে গরজ দেখাচ্ছে না। লবণ-পানিতে ট্রাকের ইঞ্জিন ও চাকা নষ্ট হচ্ছে।’
এ প্রসঙ্গে লবণ ব্যবসায়ী জানান, ট্রাকের নিচে পলিথিন বিছিয়ে লবণ বোঝাই করলে সড়কে পানি পড়বে না, এটা ঠিক। কিন্তু পলিথিনের ওপর জমে থাকা পানিতে অর্ধেক লবণ গলে যায়, যার জন্য পলিথিন বিছানো হয় না।
গত দুই মাসে টেকনাফ থেকে চকরিয়া পর্যন্ত প্রায় ১৭০ কিলোমিটার সড়কে ২০টির বেশি সড়ক দুর্ঘটনায় হয়েছে। এর মধ্যে ৯০ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে লবণ-পানিতে সড়ক পিচ্ছিল হয়ে পড়ায়।
লবণের-পানিতে সড়ক ঝুঁকিপূর্ণ। বিভিন্ন সময়ে, পুলিশ,ও হাইওয়ে পুলিশ, লবণবোঝাই ট্রাক জব্দ করলেও পরে ছেড়ে দিতে হয়। এ ক্ষেত্রে নীতিমালা করা দরকার।
‘পলিথিন মুড়িয়ে ট্রাকে ও কার্গো ট্রাক লবণ পরিবহনের নিয়ম থাকলেও অনেকে তা অমান্য করছেন বলে অভিযোগ পাচ্ছি। এ ব্যাপারে কোন রকম প্রশাসনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে কিনা, আপামোর জনগণের দাবি,।।।।