উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি//
নড়াইল সদর থানা পুলিশের অভিযানে ডাকাতির প্রস্তুতি গ্রহণকালে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ৪ সদস্য গ্রেফতার। নড়াইলে ডাকাতির প্রস্তুতি গ্রহণকালে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের চার সদস্য গ্রেফতার। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.সাইফুল ইসলাম। উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি জানান, শুক্রবার (৫ এপ্রিল) নড়াইল সদর থানা এলাকায় রাত্রিকালীন মোবাইল ডিউটি চলাকালে এসআই (নিঃ) নরোত্তম বিশ্বাস ও এএসআই (নিঃ) সাহেব আলী সঙ্গীয় ফোর্সসহ নড়াইল পৌরসভাধীন উজিরপুর কাড়ার বিল বটতলায় অবস্থানকালে জানতে পারেন যে, নড়াইল পৌরসভার অন্তর্গত ৭নং ওয়ার্ডের মাছিমদিয়া ধোপাখোলা মোড়ে লোহাগড়াগামী মহাসড়কের পশ্চিম পার্শ্বের মৃত রায়হান মোল্যার উচু ভিটা জমির আম বাগানের মধ্যে কতিপয় ডাকাত একত্রিত হয়ে এলাকায় ডাকাতির জন্য প্রস্ততি গ্রহণ করছে। উক্ত সংবাদ পেয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে তাৎক্ষনিকভাবে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ঘটনার বিষয়ে অবহিত করেন। সংবাদের সত্যতা যাচাই এবং আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রাত ২.১৫ মিনিটের সময় উল্লিখিত ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা হন। রাত ২.২০ মিনিটের সময় পুলিশের আভিযানিক টিম ঘটনাস্থল মাছিমদিয়া মৃত রায়হান মোল্যা’র উচু ভিটা জমির আম বাগানের পূর্ব পার্শ্বের ধোপাখোলা মোড় থেকে লোহাগড়াগামী মহাসড়কের নিকট পৌঁছা মাত্র বাগানের মধ্যে থেকে অজ্ঞাতনামা ৮/৯ জন ডাকাত দৌড়ে মহাসড়কের উপর অপেক্ষমান একটি ট্রাকের উপর উঠে পড়লে অজ্ঞাতনামা ট্রাক ড্রাইভার দ্রুত ট্রাক চালিয়ে লোহাগড়ার দিকে চলে যায়। উক্ত সময় পুলিশের হাক ডাক ও বাঁশির শব্দে আশপাশ থেকে লোকজন এগিয়ে আসলে সংগীয় অফিসার, ফোর্স ও স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় মৃত রায়হান মোল্যা’র উচু ভিটা জমির আম বাগানের মধ্য থেকে ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত আলামত সহ চার জন ডাকাতকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত ডাকাতরা হলো মো.রকি (২৬), পিতা- মো. আব্দুস সালাম, সাং- হরিয়ান (পূর্ব পাড়া), থানা-কাটাখালী, জেলা-রাজশাহী মো. আব্দুর রহমান স্বপন ওরফে স্বপন (২১), পিতা- মো.বেলাল হোসেন, সাং-পূর্ব দরবারপুর (আম্বর আলী সওদাগার বাড়ী), থানা- ফুলগাজী, জেলা- ফেনী মো.ইকবাল (৩৩), পিতা- আবুল ওরফে আবুল কালাম, সাং-বারোয়াজারী (কাশিপুর), থানা-মেঘনা, জেলা-কুমিল্লা; মো.আনিছ মিয়া (১৯), পিতা- মৃত মিজানুর রহমান, সাং-মাধবদী (খালপাড়া), থানা-মাধবদী, জেলা-নরসিংদী, এ/পি-টঙ্গী স্টেশন রোড, থানা-টঙ্গী পূর্ব, জেলা-গাজীপুর।
এ সময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত (ক) একটি কাঠের হাতলযুক্ত রামদা, যা কাঠের বাট সহ লম্বা ৩৩ ইঞ্চি, যার কাঠের বাট ১১ ইঞ্চি এবং লোহার অংশ ২২ ইঞ্চি, একটি কাঠের হাতলযুক্ত ধারালো ড্যাগার, যা কাঠের বাট সহ ১৪ ইঞ্চি লম্বা, যার লোহার অংশে দুইটি ছিদ্র আছে, একটি কাঠের হাতলযুক্ত লোহার হাতুড়ি, লাল টেপ দ্বারা মোড়ানো একটি কাঠের লাঠি, যা ২৩ ইঞ্চি লম্বা, (ঙ) একটি স্টীলের পাইপ, যা ২৩ ইঞ্চি লম্বা, সাদা রংয়ের মোটা সুতার রশি, যা ১২ ফুট লম্বা আলামত উদ্ধার করা হয়।
আসামিদের পিসিপিআর পর্যালোচনায় আসামিরা সকলেই আন্তঃ জেলা ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য বলে জানা যায়। তাদের নামে ডিএমপি, আরএমপি, জিএমপি, খাগড়াছড়ি জেলায় চুরি ও ডাকাতির একাধিক মামলা রয়েছে। আসামিসহ অজ্ঞাতনামা পলাতক আসামিরা আসন্ন ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে পরস্পর যোগসাজশে ঘটনাস্থলে একত্রিত হয়ে এলাকায় ডাকাতির প্রস্তুতি গ্রহণ করছিল।উল্লিখিত আসামিসহ পলাতক অজ্ঞাতনামা ৮/৯ জন আসামিদের বিরুদ্ধে নড়াইল সদর থানায় ডাকাতির প্রস্তুতির মামলা রুজু করা হয়েছে। আসামিদেরকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
নড়াইল জেলা পুলিশ সুপার মোহা.মেহেদী হাসানের সার্বিক দিক নির্দেশনায় আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে জনগণের জান মালের নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে জেলা পুলিশ সর্বদা তৎপর রয়েছে।