তুষার কবিরাজ ডুমুরিয়া খুলনা প্রতিনিধি
চুকনগরে বাদশা ট্রেডার্স প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক সরদার বাদশা করা মামলায় আজিদা বেগম( ৩৮)এক প্রতারক মহিলাকে চেক প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতে মামলায় ৪৫০০০০ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৩ মাস কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত, আজ ৬ মার্চ খুলনা যুগ্ম জেলা ও দায়রা জাজ ২ বিচারক এম এ আবু সায়ীদ এই রায় প্রদান করেন ।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায় বাদী ও আসামী পূর্ব পরিচিত ও জানাশুনা থাকায় আসামীর বাড়ি করার জন্য নগদ টাকার বিশেষ প্রয়োজ হওয়ায় বাদীর নিকট থেকে এককালীন নগদ ৪,৫০,০০০ / - ( চার লক্ষ পঞ্চাশ হাজার ) টাকা ধার হিসাবে গ্রহণ করে । পরে আসামী বাদীর পাওনা উক্ত টকা পরিশোধের জন্য গত ইং ০৪/১০/২০২০ তারিখে আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক লিঃ , চুকনগর শাখার নিজ স্বাক্ষরিত একটি চেক বাদশা ট্রেডার্স নামে বাদীকে প্রদান করে । যাহার মুদারাবাহ সঞ্চয়ী হিসাব নং- ০৫৬১১২০০৪৭৪৪৬ , চেক নং ০৮১৭১৬৮ , টাকার পরিমাণ ৪,৫০,০০০ / - ( চার লক্ষ পঞ্চাশ হাজার ) টাকা । পরে বাদী গত ইং ০১/১১/২০২০ তারিখে উক্ত চেকটি নগদায়নের জন্য ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিঃ , ডুমুরিয়া শাখায় জমা দিলে “ অপর্যাপ্ত তহবিল ” -এর জন্য উক্ত চেকটি ডিজঅনার হয় । পরে বাদী তাহার পাওনা উক্ত টাকা প্রাপ্তির জন্য গত ইং ০৯/১১/২০২০ তারিখে ‘ দৈনিক ভোরের সময় ’ পত্রিকায় লিগ্যাল নোটিশ দেয় । তাহার পরও আসামী বাদীর পাওনা উক্ত টাকা পরিশোধ না করায় আজ ০৬/০৩/২০২৪ তারিখ এন.আই এ্যাক্টের ১৩৮ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করায় খুলনা দায়রা সাব জজ২ মহামান্য বিচারক এম,এ,আবু সাঈদ দায়রা ৪১৬/২০ মামলার এই রায় প্রদান করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন খুলনা জজ কোর্টের সরকারি পাবলিক প্রসিকিউটার (এ.পি.পি.পি)এ্যাডভোকেট রোজিনা আক্তার রোজি তিনি বলেন খুলনা দায়রা সাব জজ২ মহামান্য বিচারক এম,এ,আবু সাঈদ দায়রা ৪১৬/২০ মামলার এই রায় প্রদান করেন। সরদার বাদশার কাছ থেকে আরো জানা যায় এই মহিলা বিভিন্নভাবে ইতিপূর্বে মিথ্যা মামলায় হয়রানি করার অভিযোগ করেছে তিনি । খুলনা ডুমুরিয়া উপজেলার ঐতিহাসিক চুকনগর বাজারে সরদার বাদশার বাদশা ট্রেডার্স নামে তার একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে রয়েছে । প্রতিষ্ঠানটি ২০১৫ সাল থেকে বেশ সুনামের সাথে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে । প্রতিষ্ঠানে ফ্রিজ , টিভি , রাইস কুকার , প্রেসার কুকারসহ ইলেকট্রনিক সামগ্রী ও স্টিলের খাট , শোকেস , আলমারিসহ ফার্নিচার সামগ্রী নগদ ও কিস্তিতে বিক্রয় করা হয় । আজিদা বেগম ( ৪০ ) নামে ঐ নারীর কাছে বাকীতে মাল বিক্রয় করেন তিনি ১৪,৫৪,৯২০। আজিদা বেগম বিক্রয়ের পাওনা টাকা দিতে অস্বীকার করায় তিনি আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন মামলা নাম্বার ১০৫/২২দায়রা, যে মামলারটিও বিচার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সর্দার বাদশা আরো জানান
মামলার করার পর আসামি মামলা তুলে নেয়ার জন্য তাকে বিভিন্ন সময় অপমান - অপদস্ত , মারপিট এমনকি হত্যার হুমকি প্রদান করে । কিন্তু তিনি মামলা প্রত্যাহার না করায় পরিকল্পিতভাবে গত ৯ অক্টোবর রাত ৮ টার দিকে বাদশা মোটরস এ ব্যাটারি ক্রয় করতে আসে তারা । এসময় বিবাদী একই উপজেলার নরনিয়া গ্রামের মফিজুর রহমান ও আবু তাহেরসহ ২/৩ জনকে সাথে নিয়ে রুমের ভেতরে প্রবেশ করেই তাকে গুম ও হত্যার হুমকি দেয় । যার ভিডিও ফুটেজ এখনও দোকানে সংরক্ষিত আছে । বিষয়টি তিনি তৎক্ষণাৎ ডুমুরিয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি ) মোঃ ওবাইদুর রহমান ও আটলিয়া ইউনিয়নে বিট উপ পরিদর্শক ( এসআই ) হাফিজুর রহমানকে জানান । গত ১০ অক্টোবর দুপুর ২ টার দিকে একই কথা বলে ( ব্যাটারী ক্রয়ের টাকা দেয়ার কথা বলে ) মফিজুর রহমান তাকে ডুমুরিয়া মাহেন্দ্রা স্ট্যান্ডে আসতে বলে । তখন তিনি আসামিদের পরিকল্পনার বিষয় বুঝতে না পেরে মাহেন্দ্রা স্ট্যান্ডে আসেন । এসময় জোরপূর্বক তাকে মাহেন্দ্ৰায় তুলে খুলনা অভিমুখে নিয়ে যেতে থাকে তারা । জোরপূর্বক তাকে মাহেন্দ্ৰায় তুলে নিয়ে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকে তারা । তার কাছে থাকা ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল ফোন কেড়ে নেয় । পরিস্থিতি বেগতিক দেখে জীবন বাঁচানোর তাগিদে বাজারের রেজিস্ট্রি অফিসের সামনে মাহেন্দ্র থেকে লাফিয়ে পড়ে তিনি দৌড় দেয়ার চেষ্টা করলে বিবাদী আজিদা বেগম ( ৪০ ) , মফিজুর রহমান ( ৩৮ ) আবু তাহের ( ৩৬ ) ও রানী বেগম ( ৩৫ ) সহ ১০/১২ জন তাকে বেদম মারপিট করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে । বিষয়টি স্থানীয়রা ওসি ওবাইদুর রহমানকে । জানালে থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে । উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে । এ । ঘটনায় তিনি সুস্থ হয়ে আদালতে মামলা
দায়ের করেন যাহার মামলা নাম্বার সি আর ৪৫২/২১ আদালত পিবিআই তদন্তে সাপেক্ষে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলে পিবিআই মামলার সত্যতা পেয়ে কোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করে সেই মামলাটি এখন খুলনা চিফ জুডিশিয়ার ম্যাজিস্ট্রেট ২ বিচারাধীন। মামলার পর আবারও তারা হুমকি ধামকি দিতে থাকে । এ ঘটনায় তিনি ১২ অক্টোবর ডুমুরিয়া থানায় একটি সাধারণ ডাইরী করেন । এতে তারা তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠে এবং ২১ অক্টোবর আজিদা বেগম বাদী হয়ে তার নামে আদালতে ধর্ষণ চেষ্টার মামলা দায়ের করে । যে মামলাটির তদন্ত করে ডুমুরিয়া থানা পুলিশ সত্যটা না পেয়ে মামলা তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করে, মামলার তদন্ত রিপোর্টে সম্পৃক্ততা না পাওয়াই সরদার বাদশাকে খুলনার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট মামলা থেকে অব্যাহতি প্রদান করে, ইতোপূর্বেও সরদার বাদশা ও তার প্রতিষ্ঠানের চারজন ম্যানেজারের নামেও রানী বেগম নামে এক মহিলাকে দিয়ে হয়রানি মুলোক ধর্ষণ চেষ্টার মামলা দায়ের করেন । সেই মামলাটির ও তদন্ত করার জন্য আদালত পিবিআইকে দিলে পিবিআই তদন্তে করে কোনো সত্যতা না পেয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন ফলে সে মামলা থেকেও তাকে অব্যাহতি দেয়া হয় ।